শ্রেয়সী  ( August ,2025 )
                         ISSN -2581-4079

                                      শ্রেয়সী  ( August ,2025 )
                         ISSN -2581-4079

এই খানে ক্লিক করুন

 এ মাসের কবিতা

নিশুতি

   

পুতুল পন্ডা মাইতি

অলস সময়ে ক্লান্ত দেহ মাথা রেখে নিমগ্নতার বুকে

কান পাতে রাতের বাতাস। 

 ভেসে আসে সবুজ আচ্ছাদনের ভিতর থেকে 

ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমীর অন্তরঙ্গতার নিশ্বাস । 

আঁধার গভীর উঠানে ঝরে ঝরে পড়ে

রেচন সমৃদ্ধ বিষাদ কিংবা সুখঘন মরা পাতা। 

অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের ক্যালেন্ডারে

ঘুরে ঘুরে বেড়ায় সম্ভব অসম্ভবের লিপি গাঁথা। 

নিজেকে প্রস্ফুটিত করার অধীর আগ্রহে

 প্রতিক্ষা করে থাকে বৃন্তে আলোর পিয়াসী কুঁড়ি। 

নির্বিঘ্নেই কথা বলে মরমী তারার সাথে

দিনভর জনারন্যে পদপিষ্ট পথের পাথর নুড়ি। 

 সাদা ক্যানভাস ভরিয়ে তোলে রামধনুর রঙে

নিঃশব্দ নীরবতায় থিতিয়ে পড়া কবি -শিল্পীর তুলি। 

বেরিয়ে পড়ে ডেরা থেকে একান্ত নিশাচর খাদ্যান্বেষণে

বাঁকা পথে সুযোগ খোঁজে বিপদ সংকট ভুলে। 

স্বার্থের মাটিতে বিনিদ্র আগামীকে মিটিমিটি চোখে

ধিক্কার জানায় তার প্রগতিপত্রের ঊজ্জ্বল তারা। 

কনকনে ঠান্ডায় আর প্যাচপ্যাচে বর্ষায় উত্তাপ খোঁজে

গুটিশুটি মেরে,খোলা আকাশের নীচে আছে যারা।।

Ooooooooo 

বর্ণালী রায় প্রধানের

দুটি কবিতা 

বীতশ্রদ্ধ

  

-----

আর যাবো না কারো ডাকে

যে ডাকে সে ডাকুক,

সন্ধ্যা মেঘে বৃষ্টি ঝড়ে 

খড়কুটো সব ভাসুক।


রইবো মাগো আপন ঘরে

তোমার আঁচল ছায়ে,

চাইবো না তো খোলা আকাশ

ছুটতে দক্ষিণ বায়ে।


স্বপ্নগুলোর ডানা ছেঁটে

রাখবো ভরে খাঁচায়,

কুটিল সমাজ দেখালো আমায়

কে মারে কে বাঁচায়।


বরং চলো গভীর বনে

সবুজ দিনের আশ্বাসে,

প্রথম থেকে করবো শুরু

গড়ে তোলার বিশ্বাসে।

---------- + ------------

বিবাহ প্রথায় 


তোর খাতা পেন্সিল আধা আঁকা ছবি 

ইতস্তত এখানে ওখানে ছড়ানো রয়েছে কত দুষ্টুমি ভরা কারুকাজ।

সব ছেড়ে নতুন জগতে তোর এখন নব বিচরণ। 

ছেড়ে যাওয়া প্রিয় জামা প্রিয় ঘর দোর

খুশি ভরা কতক্ষণ শাসন আর হাসিতে 

হঠাৎ গেয়ে ওঠা গানের কলি -চুপ সব!

অকারণ মা মা চিৎকারে বাড়ি হত খানখান,

চুপ সব চুপচাপ নীরবতা ফিস্ ফাস।

তোর পৃথিবীর অক্ষরেখা আজ গেছে বদলে 

জীবন ভরেছে আজ দায়িত্ব আর কর্তব্যে।

ফ্রক থেকে শাড়িতে তুই আজ নববধূ, 

শৈশবের চপলতা ডুবে গেছে সময়ে ।

এ ঘরের শূন্যতা মুখ ঢাকে গোপনে।

ওখানে নতুন সাজ শুরু হলো 

নব পর্বের।

বিবাহ প্রথা য় কেড়ে নিয়ে গেছে

সকরুণ মুগ্ধতা।

মেনে নাও আর মানিয়ে চলার

পূর্ণ শর্ত তবে সার্থক হলো আজ।

------ +------

কে

   

সুশান্ত সাহু 


ছুঁয়ে দেখিনি রোদ 

আগুনকে বুকে নিয়েছি---বহুবার  

শিশিরে ভয়---গেলো এখনো 

আমি--- মানব ন‌ই;

মনোজিৎ দাসের কবিতা 

এক সময় -


অন্যায় দেখলে 

প্রতিবাদে ঘুম আসতো না।

এখন ন্যায় - অন্যায় 

বুজতে পারি না

তাই ভীষন ঘুম পায়।

একটা সময় ভালো বই পড়লে ঘুম আসতো না,

আর এখন বই পড়লে 

ভীষন ঘুম পায়।

তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ কি আসন্ন ?

বৃষ্টির দিনে আর গান আসে না রবিঠাকুরের।

আগে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দারুন লাগতো

এখন বন্ধুরা গভীর সংসারী।

নতুন সূর্যের আলোয় - আলোকিত হবে সবার জীবন,

সেই আশায় বুক বেঁধে দিন চলে যায়।।



সিট 

 

তুমি চাইলেও আটকে রাখতে পারবেনা 

অথচ আগলে রাখার জন্য মনে কিনা 

প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছিল l মনে হয়েছিল 

এটা আমার দখলে আছে 

পুরোটাই আমি কব্জা করে নিয়েছি

  যেন আমার সিংহাসন আর 

আমি রাজা ।

কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে

তুমি চাইলেও সে জায়গায় 

থাকতে পারবে না পারো ও না !

সিংহাসন থেকে নেমে আসতে

হবেই l নিজে থেকেই হারাবে 

দখল করার বাসনা 

ইচ্ছে থাকলেও 

পরিস্থিতি তোমাকে নামিয়ে দেবে 

কয়েক ঘন্টা তোমার দখলে থাকা 

সেই জায়গাটা 

আবার কয় ঘন্টার জন্য 

ঠিক একইভাবে অন্য কারোর 

দখলে চলে যাবে l

সেও ঠিক একইভাবে  

কব্জা করতে চাইবে  

আগলে রাখতে চাইবে

 নিজের দখলে 

কয়েক ঘন্টার জন্য l

 অন্য কাউকেও নেমে যেতে হবে

 সময় এসে গেলে 

শেষ হয়ে গেলে যাত্রা

স্টেশনে পৌঁছে গেলে ।

শেষ অব্দি ওই ফাঁকা সিটটাই

 থেকে যাবে তার নিজের জায়গায় 

ঠিক আগের মত । 


বরুণ কুমার 

(২০২৪ অক্টোবর মাসের শুভ পঞ্চমীর সন্ধ্যা সময় 

কান্ডারী এক্সপ্রেস ট্রেনে হাওড়া থেকে দিঘা বাড়ি 

ফেরার পথে লেখা )

পুলকিত শ্রাবণ


  দেবাশীষ সরখেল 


 সরোবর নয়/

 লেখা হোক নদীর উপমা /

নদী থেকে আরো দূরে

 সাগরবলাকা /

ভিজে যায় প্রণয়বৃক্ষের শাখা/ এখানে শ্রাবণ অবিরল।/

 মানুষ প্রেমিক হোক

 যত/

 স্বভাবে আদিম/

 কত যে নবীন দৃশ্যের জন্ম হয়/

 কত কত নবীন জলে চলে মৎস্য শিকার/

 ঝিল্লি ও জোনাকির নিরবতা ঘিরে /

অথৈ শ্রাবণে অবিরল সঘন গহন মেঘমালা /

বাক্য।লাপ ছুটোছুটি

 জ্লে ও জঙ্গলে/

ছপ ছপ শব্দ হয় খুব/ শ্রাবণধারায় নীপশাখা অতিশয় প্রণয়পুলকিত /

চুপকথা বলে।

বাংলা প্রাণের ভাষা 
মোঃ সৈয়দুল ইসলাম 



জন্ম নিয়ে মায়ের মুখে 

বাংলা ভাষাই শুনি,

বাংলা ভাষা প্রাণের ভাষা 

হৃদয় মাঝেই বুনি।


বাংলা ভাষা রক্তে কেনা 

বলেন মা' জননী,

সালাম বরকত রফিক জব্বার 

বাংলা ভাষার খনি।


একুশ এলেই শহীদ মিনার 

যায় ভরে যায় ফুলে,

গর্ব আমার ভাষা শহীদ 

কেমনে থাকি ভুলে।


বাংলা ভাষা মধুর ভাষা 

তুলনা যার নাই,

এই ভাষাতেই দেশ বিদেশে

বাংলারই গান গাই।


সকল ভাষার চেয়ে সেরা

আমার বাংলা ভাষা,

এই ভাষাতেই বাঁচা মরা 

শান্তি সুখের আশা।


ঠিকানাঃ সাং: হাসারচর, ডাক: গনিগঞ্জ বাজার, উপজেলা: শান্তিগঞ্জ, জেলা: সুনামগঞ্জ। মোবাইল: 01728-106292 

// পথে নামো বই মেলায় //


কলমে : মনোজিৎ দাস।।


কথা দিয়ে কেউ 

কথা রাখেনি কিন্তু

কথা রেখেছে " মহিষাদল বই মেলা " ।

দীর্ঘ নয়টা বছর কেটে গেল 

মাতৃ গর্ভের যন্ত্রণার মত -

যে শিশুরা মাতৃক্রোড়ে 

তারা ও এসেছে আজ 

বইয়ের মেলায়।

বই পড়তে হয়,না হলে যে 

পিছিয়ে পড়তে হয়!!!

হিমেল রাতে , ক্লান্ত ফুল 

পায়ের চাপে ধুলো উড়িয়ে 

বই মেলা প্রাঙ্গণে পড়ে আছে 

কিছু লিফলেট, কমলা লেবুর খোসা,আর বুক ভরা আনন্দ 

বিদায় বলে কিছু নাই -

শুধুই পথ চলা -

আমাতে তোমাতে কোনো 

ভেদাভেদ নাই ,কেবল আন্তরিকতা।।

|| শিউলী ||


                                              বরুণ কুমার দাস

এখন আর কই দেখিনা 

আসতে তোমায় 

অভিমান করেছো বুঝি !

রাত্রে জানলা খুলে 

তোমাকে দেখতে পাই 

আপন মনে বসে থাকো 

নীরবে নিজের ভেতরে ডুবে 

কি যেন ভাবতে থাকো 

তোমার ভাবনার ভেতরে ঢুকে পড়ার 

রাস্তা ও খুঁজে পাই না 

এগিও কেন যেন থমকে যায় 

সম্পর্কের পরিচয় l

কিছুদিন আগেও 

ঘরের ভেতরে অন্ধকারেও 

হাত বাড়ালে 

 মেপে নিতাম তোমার পরিমিতি 

তোমার পরিচিত বস্নায়িত স্পর্শ l

তুমি যেন কেমন একটা 

নিজেকে সরিয়ে নিয়েছ 

আমার ঘরে আসতেই চাও না ,

 জানি তুমি 

অভিমান কে আঁকড়ে 

এইভাবে নিজেকে নিজের মধ্যে

মেপে মেপে রাখতে চাইছ l

তোমার আসার অপেক্ষায় আমি কিন্তু 

জানালা আর দরজা 

খুলেই রাখবো

ঘুম আসার আগে অবধি 

তোমাকে ছুঁয়ে দেখতে চাই 

অন্ধকারেও মেপে নিতে চাই 

তোমার সাজানো 

আগামী দিনের স্বপ্নগুলো l

বিদ্যা সুখের ছায়া 


মোঃ সৈয়দুল ইসলাম 


বিদ্যা ছাড়া এই ভুবনে 

চলা ভীষণ দায়,

অন্ধকারে জীবন ঢাকে

পথ খুঁজে না পায়।


বিদ্যা ভাসে দুখ সাগরে

সুখের ছায়া হয়ে, 

টাকা সম্পদ সব ক্ষয়ে যায় 

বিদ্যা যে যায় রয়ে। 


বিদ্যা হলো অমূল্য ধন

বুঝতে যেজন পারে,

সফলতার চাবিকাঠি 

ঘিরে রাখে তারে।


বিদ্যা লাভের আশায় চলো

পাঠশালাতে যাই,

বিদ্যা নামের ফুলঝুরিতে

জীবনটা সাজাই।


ঠিকানা: হাসারচর, শান্তিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ। মোবাইল -০১৭২৮১০৬২৯২


প্রবাহ চিরন্তন 

 ড. লিপিকা পণ্ডা 


অলস মধ্যাহ্নবেলা -

উত্তপ্ত ধরিত্রীর দহনদাহে 

বিপর্যস্ত আকাশ মাটি।

রিক্ত কৃশ বিটপশাখা।

আকাশের বিস্তৃত বক্ষপটে 

সূর্যদেবের কেবল একাধিপত্যময় পরিক্রমণ।


সামনে চলে যাওয়া 

তপ্ত পথের সরলরেখায় 

দু - একটা দ্বিচক্র অথবা চতুশ্চক্র যানের অলস পদসঞ্চার।

গৃহপালিত প্রাণীকুলের আনাচে কানাচে

 আশ্রয়ের প্রবল চেষ্টা।


দূরে প্রান্তরের পর প্রান্তর জুড়ে 

কেবল ধূ ধূ মরুর বিস্তার 

মরুর প্রসারে অথবা পিচ রাস্তার ওপরে 

কেবল মরীচিকার প্রবঞ্চনা।


ঋতুচক্রের আবর্তনে 

অস্তিত্বের এ নিত্য-নতুন নিত্য-পুরাতন খেলা।

বৈচিত্র্যের নব নব পর্যায়ে

নতুন নতুন ছন্দে 

সময়ের আত্মপ্রকাশ।


এরই মাঝে প্রসারিত দৃষ্টিপথে ভেসে ওঠে 

দূরে কোনো এক প্রাগৈতিহাসিক লগ্নে 

সময়ের গ্রন্থি খুলে বিস্মৃত অতীতে 

এমনি করেই নিসর্গের খেয়ালী আত্মপ্রকাশে 

প্রকৃতির সংগ্রাম।

কখনো প্রবল বাত্যাবিক্ষোভ, কখনো তুষারঝঞ্ঝা,

আবার কখনোবা প্রবল বারিসঞ্চার...

বিপর্যস্ত বিস্রস্ত প্রাণের পরিত্রাহী রব।

অসহনীয়তার চূড়ান্ত সীমায় 

হয়তোবা কখন ঘটে নিঃশব্দ কিংবা সশব্দ নিষ্ক্রমণ।


কিন্তু সময়ের স্রোতে 

জীবনের সঞ্জীবনী প্রলেপে 

চলে প্রাণের প্রবাহ -

গতি যার চিরন্তন 

নিতান্ত নির্লিপ্ততা কিংবা স্পৃহনীয়তায়।


() বিভাগীয় প্রধান ,বাংলা বিভাগ , রামনগর কলেজ 

Page:1 - 2
X