এ মাসের কবিতা
বাংলা প্রাণের ভাষা
মোঃ সৈয়দুল ইসলাম
জন্ম নিয়ে মায়ের মুখে
বাংলা ভাষাই শুনি,
বাংলা ভাষা প্রাণের ভাষা
হৃদয় মাঝেই বুনি।
বাংলা ভাষা রক্তে কেনা
বলেন মা' জননী,
সালাম বরকত রফিক জব্বার
বাংলা ভাষার খনি।
একুশ এলেই শহীদ মিনার
যায় ভরে যায় ফুলে,
গর্ব আমার ভাষা শহীদ
কেমনে থাকি ভুলে।
বাংলা ভাষা মধুর ভাষা
তুলনা যার নাই,
এই ভাষাতেই দেশ বিদেশে
বাংলারই গান গাই।
সকল ভাষার চেয়ে সেরা
আমার বাংলা ভাষা,
এই ভাষাতেই বাঁচা মরা
শান্তি সুখের আশা।
ঠিকানাঃ সাং: হাসারচর, ডাক: গনিগঞ্জ বাজার, উপজেলা: শান্তিগঞ্জ, জেলা: সুনামগঞ্জ। মোবাইল: 01728-106292
// পথে নামো বই মেলায় //
কলমে : মনোজিৎ দাস।।
কথা দিয়ে কেউ
কথা রাখেনি কিন্তু
কথা রেখেছে " মহিষাদল বই মেলা " ।
দীর্ঘ নয়টা বছর কেটে গেল
মাতৃ গর্ভের যন্ত্রণার মত -
যে শিশুরা মাতৃক্রোড়ে
তারা ও এসেছে আজ
বইয়ের মেলায়।
বই পড়তে হয়,না হলে যে
পিছিয়ে পড়তে হয়!!!
হিমেল রাতে , ক্লান্ত ফুল
পায়ের চাপে ধুলো উড়িয়ে
বই মেলা প্রাঙ্গণে পড়ে আছে
কিছু লিফলেট, কমলা লেবুর খোসা,আর বুক ভরা আনন্দ
বিদায় বলে কিছু নাই -
শুধুই পথ চলা -
আমাতে তোমাতে কোনো
ভেদাভেদ নাই ,কেবল আন্তরিকতা।।
|| শিউলী ||
বরুণ কুমার দাস
এখন আর কই দেখিনা
আসতে তোমায়
অভিমান করেছো বুঝি !
রাত্রে জানলা খুলে
তোমাকে দেখতে পাই
আপন মনে বসে থাকো
নীরবে নিজের ভেতরে ডুবে
কি যেন ভাবতে থাকো
তোমার ভাবনার ভেতরে ঢুকে পড়ার
রাস্তা ও খুঁজে পাই না
এগিও কেন যেন থমকে যায়
সম্পর্কের পরিচয় l
কিছুদিন আগেও
ঘরের ভেতরে অন্ধকারেও
হাত বাড়ালে
মেপে নিতাম তোমার পরিমিতি
তোমার পরিচিত বস্নায়িত স্পর্শ l
তুমি যেন কেমন একটা
নিজেকে সরিয়ে নিয়েছ
আমার ঘরে আসতেই চাও না ,
জানি তুমি
অভিমান কে আঁকড়ে
এইভাবে নিজেকে নিজের মধ্যে
মেপে মেপে রাখতে চাইছ l
তোমার আসার অপেক্ষায় আমি কিন্তু
জানালা আর দরজা
খুলেই রাখবো
ঘুম আসার আগে অবধি
তোমাকে ছুঁয়ে দেখতে চাই
অন্ধকারেও মেপে নিতে চাই
তোমার সাজানো
আগামী দিনের স্বপ্নগুলো l
বিদ্যা সুখের ছায়া
মোঃ সৈয়দুল ইসলাম
বিদ্যা ছাড়া এই ভুবনে
চলা ভীষণ দায়,
অন্ধকারে জীবন ঢাকে
পথ খুঁজে না পায়।
বিদ্যা ভাসে দুখ সাগরে
সুখের ছায়া হয়ে,
টাকা সম্পদ সব ক্ষয়ে যায়
বিদ্যা যে যায় রয়ে।
বিদ্যা হলো অমূল্য ধন
বুঝতে যেজন পারে,
সফলতার চাবিকাঠি
ঘিরে রাখে তারে।
বিদ্যা লাভের আশায় চলো
পাঠশালাতে যাই,
বিদ্যা নামের ফুলঝুরিতে
জীবনটা সাজাই।
ঠিকানা: হাসারচর, শান্তিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ। মোবাইল -০১৭২৮১০৬২৯২
প্রবাহ চিরন্তন
ড. লিপিকা পণ্ডা
অলস মধ্যাহ্নবেলা -
উত্তপ্ত ধরিত্রীর দহনদাহে
বিপর্যস্ত আকাশ মাটি।
রিক্ত কৃশ বিটপশাখা।
আকাশের বিস্তৃত বক্ষপটে
সূর্যদেবের কেবল একাধিপত্যময় পরিক্রমণ।
সামনে চলে যাওয়া
তপ্ত পথের সরলরেখায়
দু - একটা দ্বিচক্র অথবা চতুশ্চক্র যানের অলস পদসঞ্চার।
গৃহপালিত প্রাণীকুলের আনাচে কানাচে
আশ্রয়ের প্রবল চেষ্টা।
দূরে প্রান্তরের পর প্রান্তর জুড়ে
কেবল ধূ ধূ মরুর বিস্তার
মরুর প্রসারে অথবা পিচ রাস্তার ওপরে
কেবল মরীচিকার প্রবঞ্চনা।
ঋতুচক্রের আবর্তনে
অস্তিত্বের এ নিত্য-নতুন নিত্য-পুরাতন খেলা।
বৈচিত্র্যের নব নব পর্যায়ে
নতুন নতুন ছন্দে
সময়ের আত্মপ্রকাশ।
এরই মাঝে প্রসারিত দৃষ্টিপথে ভেসে ওঠে
দূরে কোনো এক প্রাগৈতিহাসিক লগ্নে
সময়ের গ্রন্থি খুলে বিস্মৃত অতীতে
এমনি করেই নিসর্গের খেয়ালী আত্মপ্রকাশে
প্রকৃতির সংগ্রাম।
কখনো প্রবল বাত্যাবিক্ষোভ, কখনো তুষারঝঞ্ঝা,
আবার কখনোবা প্রবল বারিসঞ্চার...
বিপর্যস্ত বিস্রস্ত প্রাণের পরিত্রাহী রব।
অসহনীয়তার চূড়ান্ত সীমায়
হয়তোবা কখন ঘটে নিঃশব্দ কিংবা সশব্দ নিষ্ক্রমণ।
কিন্তু সময়ের স্রোতে
জীবনের সঞ্জীবনী প্রলেপে
চলে প্রাণের প্রবাহ -
গতি যার চিরন্তন
নিতান্ত নির্লিপ্ততা কিংবা স্পৃহনীয়তায়।
() বিভাগীয় প্রধান ,বাংলা বিভাগ , রামনগর কলেজ
বিশ্ব বরেণ্য গোবিন্দ পালের কবিতা শহর এখুনি চল আমার গাঁয়ে*
(*স্বর্গীয় ওম প্রকাশ শর্মা*)
আমার গাঁয়ের কাছে
সব কিছুই যেন নতুন,
শহরের রাস্তায়
সূর্যের মত
অসংখ্য আলো
ঝলমল করছে
আর আমার গাঁয়ে
রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকার
প্রসারিত হয়ে আছে,
শহরের ঘরে ঘরে
আমার গাঁয়ের জঙ্গলের
শাল শেগুন গাছের তৈরি
ফার্নিচারে সজ্জিত,
অথচ..
আমার গাঁয়ের ঘরে
একটা বাবলা কাঠের
খাট অবদি নেই,
শহরের বাচ্চারা মাখন লাগিয়ে
পাউরুটি খাচ্ছে
আর আমার গাঁয়ের বাচ্চারা
বাসী সুকনো রুটি চবাচ্ছে
আর ভাবছে
কোন দিন না কোনদিন
আমাদের গাঁয়ে ও
সূর্য উদয় হবে,
শহর এখুনি চল আমার গাঁয়ে
হতে তোর পায়ে ফোসকা পড়বে
পা দিয়ে রক্ত ঝরবে
তখন বাপ ঠাকুরদার কথা
মনে পড়বে,
গাঁয়ের শীতল
নির্মল জল দিয়ে পা ধুয়ে
কিছুক্ষণের জন্যে
অশ্বত্থ গাছের ছায়ায়
জিরিয়ে নিস,
শহর এখুনি চল আমার গাঁয়ে।
(*সুপ্রসিদ্ধ এডভোকেট কবি সাহিত্যিক ও ভুতপূর্ব মহাসচিব স্বর্গীয় ওম প্রকাশ শর্মার একটি হিন্দি কবিতার বাংলা অনুবাদ, অনুবাদক - গোবিন্দ পাল*)
*আমার কলম*
আমার বোধ আমার কলমকে জিজ্ঞেস করে
মানুষের খেলা আর কত লিখবে
লাশের খেলার উপর লিখতে লিখতে
তুমি হাঁপিয়ে যাও না!
বৈঠা ছাড়া নৌকো নিয়ে সমুদ্রের উথাল পাথাল
ঢেউয়ের সাথে কি করে পাড়ি দেবে?
চারপাশে চেয়ে দেখ লাশের বাজার বসেছে
বিষাদে ভরা গরীবের উনুন খাঁ খাঁ করছে
তবুও নিস্তব্ধ আমার কলমকে বারবার আমার
ভিতরের বোধ টা জাগিয়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে
আমার চেতনা আজ ঘরে ঘরে
প্রতিটি ভাঙা মন কে জোড়া লাগাতে
আমার কলমের দিকে
ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে
অবশেষে কলম নিজেই নিজের ভাঙা মনটাকে
জোড়া লাগিয়ে বলল-
এই বিশ্বের মিথ্যে অহংকার
ও আডম্বর দেখে - দেখে
নিস্তব্ধ কবরের ভিতর থেকে ফুঁড়ে উঠছে
আমার সমস্ত ভাবনা ও চেতনার স্ফুর্লিঙ্গ
তবে কলম কোনো দিন থেমে থাকে না
সমবেদনা হীন এই নিষ্ঠুর মরুভূমির মধ্যে ও
সে তার রাস্তা খুঁজে নেয়।
------------------------***********---------------------
*গোবিন্দ পাল*
গাজা
আজহারুল হক
গাজা একটি দুঃস্বপ্নের নাম,
সভ্যতার সমস্ত বিষ জড়ো হয়েছে সেখানের
এক চিলতে মাটিতে।
শত শত জালিনওয়ালাবাগ ঘটে চলেছে অহরহ,
অন্য প্রান্তে আমরা যখন ভাত ঘুমে আচ্ছন্ন,
গাজায় তখন ক্ষুধার্ত শিশু ঘাস খুঁজে জ্বলন্ত বারুদে ঝলসে ওঠে।
বিশ্ব বিবেক তখন বিশ্ব মিডিয়ার সঙ্গে দ্বৈত সংগীত রচনা করে -
সন্ত্রাসবাদ আতঙ্কবাদ আরো কত কি।
এদের যেন স্বাধীনতা হয় না,এদের যেন প্রতিরোধের লাইসেন্স নেই।
হে দ্বিমুখী সময়! তুমি নতুন সকালে কি করে মুখ দেখাবে সূর্য শিশুদের সামনে?
পৃথিবী তো ঠিক আবার তার কক্ষ পথে ফিরবেই,
সাময়িক উপচে পড়া জল আবার ভুতলেই ফিরবে
রক্তের এই অজস্র দাগের আঁকিবুকির মাঝে তুমি মাথা উঁচু করে হাঁটতে পারবে তো?
খাবারের প্রাচুর্য দেখে কি তোমার ঘাস পাতার কথা ভেবে
মাথা হেঁট হবে না?
যদি না হয় তবে তোমার ডিএনএ মানুষের সঙ্গে মেলে না।
০০ শিল্পী ভিলা, বিদ্যাসাগর কলেজ পাড়া, পীরতলা, টাউন +পোস্ট -সিউড়ি,জেলা -বীরভূম, পিন -৭৩১১০১
হোয়াটস্যাপ নাম্বার 9775741694
কবি পরিচিতি
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর থানার যুব কবি মোহন কুমার জানা । "এগরা সারদা শশী ভূষণ" কলেজ থেকে ২০২৩ সালে স্নাতকোত্তর হন। স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। ২০১৯ সালে স্কুলের 'অন্বেষণ' পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত'ক্লান্ত পৃথিবী' কবিতা হাতে নিয়ে পথ চলা শুরু l কবির সম্পাদিত পত্রিকা "কবি নিকেতন"। বর্তমানে কবি অনলাইন ম্যাগাজিন ও বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করে থাকেন l
মোহন কুমার জানার কবিতা
১) *কবিতা লিখে*
হে একাকিত্বতা—
আমার কবিতা লেখার টেবিলে
এক গ্লাস মৃত্যু রেখে দিয়ে যাও
চারিদিকে এখন বিষাদের রোদ
ভীষণ পিপাসা কাতর।
হৃৎপিণ্ড জুড়ে আঘাত আঁকছে প্রেম
এই কাগজের সংসারে কবিতা লিখে
অসুখ সারানো যায় না।
২) *অপরাধ*
*—মোহন কুমার জানা*
ছাগলের মতো গ্রীবা নীচু করে
ঘাস গিলে নিতে পারছি না বলে
আমাদের বাগানে তাই ঘাস জন্মায় না।
পৃথিবীর সমগ্র ঘাস এখন তোমাদের
কাঁচা হলুদের মতো রোদ নামে ঘসে
শিশিরের ঢেউয়ে কীটেদের স্নান।
তরুণীর সবুজ ড্রেসে জোঁকের রক্ত ড্রয়িং
জিরাফের মতো মগজ উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি বলে
আমাদের আজ অগাধ অপরাধ।
৩) *ঝাপসা*
*—মোহন কুমার জানা*
আমার রেটিনা জুড়ে
এক একর মেঘ।
অশ্রুনালী ঘিরে
বিষাদের শ্লেষ্মা
চশমার ভেতর
বাল্বের মতো একটি সূর্য
তবুও তোমাকে
ঝাপসা দেখছি।
-----০---
রজত সান্যাল
:
পিতার নাম: স্বর্গীয় ডক্টর রঞ্জিত সান্যাল
জন্ম তারিখ : ৯ ডিসেম্বর ১৯৬০
বিহারের পুর্ণিয়া তে
শিক্ষা : কমার্স স্নাতক, মার্কেটিং ও সেলস তে ডিপ্লোমা। ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং এ মাস্টার্স।
বর্তমানে ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট
হিন্দি কবিতা প্রকাশিত :
শব্দ প্রবাহ পত্রিকা উজ্যাইন ,বার্ষিক কাব্য সংখ্যা জানুয়ারি মার্চ ২০১৩,২০১৪।
সাহিত্য গুঞ্জন পত্রিকা ইন্দোর জানুয়ারি মার্চ ২০১৪, কবিতা সপ্তক ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ কবিতা সংকলন ।
সাহিতৈয়ান পত্রিকা গবালিওর / গওয়ালিয়র।
সত্য দর্শন পত্রিকা গগনপুর আম্বালা।
বীণা পত্রিকা ইন্দোর অক্টোবর ২০১৫
কথা পত্রিকা এলাহাবাদ অক্ষরা পত্রিকা ভোপাল
নয় অধ্যায় দেহরাদুন, গর্ভনাল পত্রিকা ভোপাল,
সমাজ প্রবাহ বোম্বে, ইন্দোর সমাচার, বিজয় দর্পণ টাইমস।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ২০০০ সাল।
নয়া সাহিত্যে নিবন্ধ পত্রিকা সম্পাদনা ২০১৭ থেকে। হিন্দি কবিতা সমগ্র আছে বোধি প্রকাশন থেকে।
কবিতার চাষ হয় না
রজত সান্যাল
বারোদা গুজরাত
কবিতার কোনও দিন চাষ হয় না,
কিন্তু বীজ হয়,আবার কিছু সম্পর্কে প্রেম হয় না,
প্রেমে একটা আত্মীয়তা বা সম্বন্ধ হয়,
আমি কিছু কবিতার নাম দিই নি !
যেমন আমাদের প্রেমের নাম ও আজানা ,
বা কোনও নাম নেই,ওই সব কবিতার নাম তোমার নামেই,
কোনও সংকোচ করো না,
আমি কোনও দিন কণ্ঠ থেকে
তোমার নাম বলবো না
কিছু ক্ষত কখনও পুঁজ বের করে না,
কিন্তু কাঁটার মতো বিধতে থাকে,
দুঃখ কি,
ছোট পিঁপড়ের উৎসব
যে বৃষ্টির ঋতুর কথা জানে
আমি ওই বৃষ্টিতে মন ভরে ভিজতে চাই
অনুভব করতে চাই বৃষ্টির অপরূপ দৃশ্য
বৃষ্টির একটা সুন্দর কাঁটার মতো দাগ
তোমার প্রেমের জন্য
আমি দুঃখের অন্তিম সিঁড়ি পর্যন্ত যেতে চাই
তুমি বলতে কোনও সময়
আমি প্রেম করি না তোমাকে
ভালোবাসি নি
দেখো না প্রিয়তম তোমার প্রেমে
আমি আমার দুঃখের সঙ্গেও প্রেম করেছি
তুমি বলতে আমি কোনো ও দিন
আমি তোমার জন্য ভাবি নি
অনুভব করোনা
তোমার কথা চিন্তা করতে করতে
একদিন দুঃখের সিঁড়ি জয় করতে হবে।
###
ঈশ্বর নয় ঘুম চাই -রজত সান্যাল
বারোদা ,গুজরাত
ঈশ্বর নয় ঘুম চাই মেয়েদের, মহিলাদের ঈশ্বর নয়
প্রেমিক নয়,রূঢ়, স্বাদ হীন লোক চাই আসে পাসে
রূঢ়, স্বাদ হীন লোক চাই আসে পাসে
যে শুয়ে পড়লেই আলো নিভিয়ে দেয় অনায়েসে
কাছে যেও না, খুব নিবিড় নয়
বাসে, ট্রামে, আর চেয়ারে তে বসে থাকা মেয়েদের, মহিলাদের,ওদের তোমার নয়,ঘুমের দরকার,ওদের ঘুম ভেঙে গেছে সৃষ্টির আরাম্ভের সঙ্গে,
ওরা জেগে আছে গুহায়, অট্টালিকায়, সুড়ঙ্গে, কোনও গর্ভে,ওদের চোখে ঘুম আসতেই
পুরুষের শিকার না হয়ে পড়ে
জংলি পশুর / মানুষের আঘাতের সঙ্গে
যুদ্ধ করতে থাকা যৌবনের ঘুম,বৃদ্ধ অবস্থায় অনিন্দ্রা থেকে,ঘুম একমাত্র যার অনেক দাম,
যা ওনারা প্রেম পরিণয় সন্ততি
কিছু পাওয়ার জন্য অনেক কিছু চুকাতে / বদলা দিতে হয়েছে,
আজকের রাতে ওদের শুতে দাও পিঠ পেছন করে,আজ ওদের সঙ্গে অনেক আদরের আগে, ভালো বাসার আগে ,চোখ ভর্তি ঘুম চাই ওদের।
প্রণব কান্তি ভট্টাচার্যের কবিতা
: || তিলোত্তমা ||
এই যে মেয়ে তিলোত্তমা,
আর-জি-করের ' হল্ ঘরে ' তুই
শুয়ে ছিলি রক্ত মেখে!
অবাক হয়ে ভাবছলি কি?
যাদেরকে তুই জেনেছিলি- --
বন্ধু, সাথী, অভিভাবক,
তারাই তোকে আঁচড়ে-কামড়ে
মেরেই দিল!!
ছুট্টে গিয়ে ' তোর দেহটা '
চিতার উপর রেখে দিয়ে
আগুন জ্বেলে--জ্বালিয়ে দিল।
হাঁপ ছেড়ে সব ভাবলো-- এবার
বাঁচা গেল।
প্রমাণ-টমাণ নিকেশ হ'লো।
জানবে না কেউ--
কারা দোষী, কারা পশু।
পুড়ছে মেয়ে তিলোত্তমা,
দাউ দাউ দাউ জ্বলছে চিতা।
চিতার আগুন ছিটকে গিয়ে
ছড়িয়ে গেল রাজ্য গোটা।
লক্ষ কোটি অগ্নি কণা
উঠলো জ্বলে 'মশাল' হয়ে,
বুঝে গেল রাজ শক্তির ---
সাত - সতেরো ছল - চাতুরি।
চতুর্দিকে ' নাছোড় মশাল '
চাইছে বিচার, ন্যায্য বিচার।
এই যে মেয়ে তিলোত্তমা,
প্রাণ দিয়ে তুই বুঝিয়ে গেলি--
বড্ড বেশী ' বেঁচে ' আছিস।
- || সে আসে ||
উচ্ছল উতরোল সরসীর বুকে
তরঙ্গের উদ্দাম খেলা সাঙ্গ হলে---
যখন জলপৃষ্ঠ শান্ত হয়,
তখন সে আসে।
যখন গর্ভিণীরা, প্রসব প্রাক্কালে
সৃজন বেদনায় অস্থির হয়,
তখন সে আসে।
তিন-প্রহর রাতে---
চরাচর যখন নিদ্রামগ্ন,
তখন সে চুপি চুপি আসে।
ব্রাহ্ম-লগ্নে ঘুম ভাঙিয়ে
কানামাছি খেলে।
যখন অন্তরে---
সংসার ' প্রপঞ্চ ' হ'য়ে যায়,
তখন সে পালকের মতো
শব্দহীন পায়ে এসে---
পিঁড়ি পেতে বসে।
-----***------