এ মাসের কবিতা
প্রণব কান্তি ভট্টাচার্যের কবিতা
: || তিলোত্তমা ||
এই যে মেয়ে তিলোত্তমা,
আর-জি-করের ' হল্ ঘরে ' তুই
শুয়ে ছিলি রক্ত মেখে!
অবাক হয়ে ভাবছলি কি?
যাদেরকে তুই জেনেছিলি- --
বন্ধু, সাথী, অভিভাবক,
তারাই তোকে আঁচড়ে-কামড়ে
মেরেই দিল!!
ছুট্টে গিয়ে ' তোর দেহটা '
চিতার উপর রেখে দিয়ে
আগুন জ্বেলে--জ্বালিয়ে দিল।
হাঁপ ছেড়ে সব ভাবলো-- এবার
বাঁচা গেল।
প্রমাণ-টমাণ নিকেশ হ'লো।
জানবে না কেউ--
কারা দোষী, কারা পশু।
পুড়ছে মেয়ে তিলোত্তমা,
দাউ দাউ দাউ জ্বলছে চিতা।
চিতার আগুন ছিটকে গিয়ে
ছড়িয়ে গেল রাজ্য গোটা।
লক্ষ কোটি অগ্নি কণা
উঠলো জ্বলে 'মশাল' হয়ে,
বুঝে গেল রাজ শক্তির ---
সাত - সতেরো ছল - চাতুরি।
চতুর্দিকে ' নাছোড় মশাল '
চাইছে বিচার, ন্যায্য বিচার।
এই যে মেয়ে তিলোত্তমা,
প্রাণ দিয়ে তুই বুঝিয়ে গেলি--
বড্ড বেশী ' বেঁচে ' আছিস।
- || সে আসে ||
উচ্ছল উতরোল সরসীর বুকে
তরঙ্গের উদ্দাম খেলা সাঙ্গ হলে---
যখন জলপৃষ্ঠ শান্ত হয়,
তখন সে আসে।
যখন গর্ভিণীরা, প্রসব প্রাক্কালে
সৃজন বেদনায় অস্থির হয়,
তখন সে আসে।
তিন-প্রহর রাতে---
চরাচর যখন নিদ্রামগ্ন,
তখন সে চুপি চুপি আসে।
ব্রাহ্ম-লগ্নে ঘুম ভাঙিয়ে
কানামাছি খেলে।
যখন অন্তরে---
সংসার ' প্রপঞ্চ ' হ'য়ে যায়,
তখন সে পালকের মতো
শব্দহীন পায়ে এসে---
পিঁড়ি পেতে বসে।
-----***------